সার্টিফিকেট হারিয়ে গেলে কি করবেন?

কলেজের ক্লাস শেষ করে ফটোকপি করবেন বলে মূল মার্কশিট আর সনদের ফাইল নিয়ে ছুটছেন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও বাড়ি ফেরার পথে মূল কপির ফাইলটি ফেলে আসলেন।এরকমভাবেই অসতর্কতা, দুর্ঘটনা বা ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে অনেকেই হারাচ্ছে মূল্যবান কাগজপত্রের মূল কপি। তাই এবার আসুন জেনে নেয়া যাক মূল কপির অনুলিপি তোলার নিয়ম-কানুন।


http://britannia.vsb.bc.ca/business_education/images_business_ed/OfficialAchievementCertificate.jpg

পরবর্তী পদক্ষেপগুলো যেভাবে নিবেন
আপনাকে থানায় করা জিডির কপি, পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির কাটিং, প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ডের সত্যায়িত কপি সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ড অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট বিভাগে আপনাকে জমা দিতে হবে। এরপর সেখান থেকে বিনা মূল্যের আবেদনপত্রটি সংগ্রহ করে, আবেদনপত্রটি ভালোভাবে পূরণ করতে হবে। নিয়মিত এবং অনিয়মিত প্রার্থীদের আবেদনের নীচে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের স্বাক্ষর ও সিলমোহর থাকতে হবে। আপনার সনদ তোলার নির্ধারিত আবেদনপত্রের সঙ্গে জিডি (সাধারণ ডায়েরী), মূল সনদ, প্রবশপত্র, নম্বরপত্র ইত্যাদি থাকতে হবে। কাগজ হারিয়ে গেলে, নষ্ট হয়ে অথবা পুড়ে গেলে সংশ্লিষ্ট এলাকার থানায় জিডি করতে হবে। হারানো কাগজটি বর্ণনাসহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে একটি আবেদন করতে হবে। এরপর আপনার আবেদনের মূল কপি থানায় জমা দিতে হবে এবং ফটোকপি, জিডি নম্বর ও সিলমোহর আবেদনকারীকে ফেরত দিতে হবে।
পত্রিকায় বিজ্ঞাপন
থানায় জিডি করার পর আপনাকে জিডির কপি নিয়ে পত্রিকায় একটি হারানো বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে এবং বিজ্ঞাপনে জিডির নম্বর উল্লেখ করতে হবে। ২০ শব্দের বিজ্ঞাপনে খরচ হবে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার মতো। আরও যা যা আপনাদের অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে। যেমন- সনদপত্র, নম্বরপত্র বা প্রবেশপত্রের ক্ষেত্রে পরীক্ষার নাম, শাখা, ব্যাংক ড্রাফট হিসেবে জমা দিতে হবে। ১৫ দিন পর তা সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হবে। আর যদি আপনি জরুরি ফিসহ বিজ্ঞাপন দিতে চান, তাহলে তা তিনদিনের মধ্যে আবেদনকারীকে দিয়ে দেয়া হবে।
সতর্কতা অবলম্বন করুন
যখন তখন প্রয়োজনীয় কাগজপত্রটি হারিয়ে যায়। পুড়ে যায় অথবা নষ্ট হয়ে যায়। তাই এ ধরনের বিড়ম্বনা পোহানোর চাইতে কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করাটা অনেক ভাল। এক্ষেত্রে
প্রয়োজনীয় কাগজের মূল কপি এদিকে-ওদিকে না ছুটে অফসেট ভাল ফটোকপি মেশিনে একসেট কপি করিয়ে তা থেকে পরবর্তীতে ফটোকপি করলে অহেতুক এসব ঝামেলায় পড়তে হবে না। এসব ঝামেলা থেকে খুব সহজেই রেহাই পেয়ে যাবেন।

২য় ধাপঃ

প্রথমে যা করবেন
ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. ফাহিমা খাতুন জানালেন, সার্টিফিকেট, নম্বরপত্র বা প্রবেশপত্র হারিয়ে গেলে দেরি না করে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এর জন্য প্রথমে আপনার এলাকার নিকটবর্তী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে হবে। জিডির একটি কপি অবশ্যই নিজের কাছে রাখতে হবে। এরপর যেকোনো একটি দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। বিজ্ঞপ্তিতে নাম, শাখা, পরীক্ষার কেন্দ্র, রোল নম্বর, পাসের সাল, বোর্ডের নাম এবং কিভাবে আপনি সাটিফিকেট, নম্বরপত্র অথবা প্রবেশপত্র হারিয়েছেন তা সংক্ষেপে উল্লেখ করতে হবে।
এরপর শিক্ষা বোর্ডে
থানায় জিডি ও পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আপনাকে যেতে হবে যে বোর্ডের অধীনে পরীক্ষা দিয়েছেন সেই শিক্ষা বোর্ডে। শিক্ষাবোর্ডের ‘তথ্যসংগ্রহ কেন্দ্র’ থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহের পর নির্ভুলভাবে পূরণ করতে হবে। এরপর নির্ধারিত ফি সোনালী ব্যাংকের ডিমান্ড ড্রাফটের মাধ্যমে বোর্ডের সচিব বরাবর জমা দিতে হবে। টাকা জমা হওয়ার পর আবেদন কার্যকর হবে। আবেদনপত্রের সঙ্গে মূল ব্যাংক ড্রাফট, পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির কাটিং ও থানার জিডির কপি জমা দিতে হবে।
আবেদনপত্রে যা পূরণ করতে হবে
আবেদনপত্র পূরণের ক্ষেত্রে প্রথমেই উল্লেখ করতে হবে আপনি কোন পরীক্ষার (মাধ্যমিক না উচ্চমাধ্যমিক) কী হারিয়েছেন এবং কী কারণে আবেদন করছেন। আবেদনপত্রের বিভিন্ন অংশে ইংরেজি বড় অক্ষরে এবং বাংলায় স্পষ্ট অক্ষরে পূর্ণ নাম, মাতার নাম, পিতার নাম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম, রোল নম্বর, পাশের বিভাগ/জিপিএ, শাখা, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, শিক্ষাবর্ষ এবং জন্মতারিখসহ বিভিন্ন তথ্য লিখতে হবে। পরবর্তী অংশে জাতীয়তা, বিজ্ঞপ্তি যে দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে সেটির নাম ও তারিখ এবং সোনালী ব্যাংকের যে শাখায় ব্যাংক ড্রাফট করেছেন সে শাখার নাম, ড্রাফট নম্বর ও তারিখ উল্লেখ করতে হবে। আবেদনপত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধানের সুপারিশের প্রয়োজন হবে। এতে তার দস্তখত ও নামসহ সিলমোহর থাকতে হবে। আর প্রাইভেট প্রার্থীদের আবেদনপত্র অবশ্যই গেজেটেড কর্মকর্তার স্বাক্ষর ও নামসহ সিলমোহর থাকতে হবে।
ব্যাতিক্রম আছে
নষ্ট হয়ে যাওয়া সনদপত্র/নম্বরপত্র/একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্টের অংশবিশেষ থাকলে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে না বা থানায় জিডি করতে হবে না। এ ক্ষেত্রে আবেদনপত্রের সঙ্গে ওই অংশবিশেষ জমা দিতে হবে। তবে সনদে ও নম্বরপত্রের অংশবিশেষে নাম, রোল নম্বর, কেন্দ্র, পাশের বিভাগ ও সন, জন্ম তারিখ ও পরীক্ষার নাম না থাকলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। আর বিদেশি নাগরিককে ব্যাংক ড্রাফটসহ নিজ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।
কত টাকা লাগবে
সাময়িক সনদ, নম্বরপত্র, প্রবেশপত্র ফি (জরুরি ফিসহ) ১৩০ টাকা। এ ছাড়া ত্রি-নকলের জন্য ১৫০ টাকা এবং চৌ-নকলের জন্য ২৫০ টাকা ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে জমা দিতে হয়।
Previous Post
Next Post

post written by: